যা শিখতে পারবে
হ্যালো বন্ধুরা! কখনও ভেবেছো কিভাবে আমাদের ঘরের লাইটগুলো জ্বলে বা খেলনা কাজ করে? এর সবকিছুই ইলেকট্রিক সার্কিট নামে একটি মজার জিনিসের উপর নির্ভর করে! আজ আমরা শিখবো দুই ধরনের সংযোগ সম্পর্কে—সিরিজ সংযোগ ও প্যারালাল সংযোগ। চল, মজার এই বিজ্ঞান অভিযানে ডুবে যাই!
সার্কিট কী?
একটি সার্কিট হলো এমন একটি পথ যেখান দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। যেমন পানির পাইপ দিয়ে পানি বয়ে যায়, তেমনই তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য আমাদের দরকার একটি পাওয়ার উৎস (যেমন ব্যাটারি) এবং কিছু যন্ত্রপাতি (যেমন বাতি বা খেলনা) যা বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে।
সিরিজ সংযোগ
সিরিজ সংযোগ: ঠিক এমন, যেমন তোমার বন্ধুরা হাতে হাত ধরে এক সারিতে দাঁড়িয়েছে। যদি একজন হাত ছেড়ে দেয়, তবে পুরো সারি ভেঙে যাবে।
সিরিজ সার্কিটের বৈশিষ্ট্য:
– সব যন্ত্রপাতি (যেমন লাইট) একের পর এক যুক্ত থাকে।
– বিদ্যুৎ প্রত্যেকটি যন্ত্রের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।
– যদি একটি যন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়, পুরো সার্কিট বন্ধ হয়ে যায়।
উপরের চিত্রটা উদাহরণ:
যদি একটি বাতি নিভে যায়, পুরো তারের লাইট নিভে যেতে পারে। এর কারণ, বিদ্যুৎ সেই নষ্ট বাতির মধ্য দিয়ে যেতে পারে না!
প্যারালাল সংযোগ
প্যারালাল সংযোগ: একটু ভিন্ন। এটা এমন, যেন তোমার বন্ধুরা সবাই পাশাপাশি হাঁটছে কিন্তু একে অপরের সাথে হাত ধরে নেই। প্রত্যেকজন আলাদা পথে চলতে পারে, তবুও একই দলে থাকে।
প্যারালাল সার্কিটে:
– প্রত্যেক যন্ত্র আলাদাভাবে পাওয়ার উৎসের সাথে যুক্ত থাকে।
– বিদ্যুৎ একাধিক পথে প্রবাহিত হতে পারে।
– যদি একটি যন্ত্র বন্ধ হয়ে যায়, অন্যগুলো ঠিকই কাজ করতে থাকে।
উদাহরণ:
ধরো, তোমার দুটি বাতি প্যারালালে সংযুক্ত। যদি একটি বাতি নষ্ট হয়ে যায়, অন্যটি ঠিকই জ্বলতে থাকবে! তোমার ঘরের লাইটগুলো এমনই কাজ করে, তাই একটি নিভে গেলেও তুমি অন্ধকারে থাকবে না।
কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ?
সিরিজ ও প্যারালাল সংযোগ বুঝলে তুমি জানতে পারবে কিভাবে বিভিন্ন যন্ত্র একসাথে কাজ করে। আর তুমি শিখবে কোন সংযোগ কোথায় ব্যবহার করা ভালো:
– সিরিজ সংযোগ সহজ কিন্তু একটি যন্ত্র নষ্ট হলে পুরো সার্কিট বন্ধ হয়ে যায়।
-প্যারালাল সংযোগ বেশি নির্ভরযোগ্য, কারণ এক যন্ত্র নষ্ট হলেও বাকিগুলো কাজ করে।
ব্যাটারির সিরিজ কানেকশন
সিরোজ কানেকশন: প্রতিটি ব্যাটারির পজিটিভ(লাল) এবং নেগেটিভ(কালো) প্রান্ত রয়েছে। যখন ব্যাটারীগুলোকে সিরিজে কানেক্ট করা হয় তখন ভোল্টেজ যোগ হয়। এই যেমন ধরো রিমোটে ব্যাটারিগুলো সিরিজে কানেকশন থাকে। প্রতিটি ব্যাটারি ১.৫ ভোল্টের হয়ে থাকে। যেহেতু সিরিজ কানেকশন হয় তাই দুটি ব্যাটারি যোগ হয়ে ৩ ভোল্ট হয়।
চিত্র চিত্র দেখা যাচ্ছে দুটি ৯ ভোল্টের ব্যাটারি
চিত্র দেখা যাচ্ছে দুটি ব্যাটারি সিরিজ সংযোগ একত্রিত হয়ে 18 ভোল্ট মাল্টিমিটারের শো করছে। অতএব যেখানে বেশি ভোল্ট দরকার সেখানে আমরা ব্যাটারিগুলোকে সিরিজে কানেকশন করব। যেমন ধরো রিমোটের একটা ব্যাটারি 1.5 ভোল্ট। কিন্তু রিমোটের প্রয়োজন তিন ভোল্ট তাই ব্যাটারি গুলোকে সিরিজে কানেকশন করা হয়।
ব্যাটারির প্যারালাল কানেকশন
ব্যাটারির প্যারালাল কানেকশনগুলো ওইখানেই ব্যবহার করা হয় যেখানে আমাদের বেশি সময় ধরে একটা যন্ত্র চালানোর প্রয়োজন হয়।
এই ক্ষেত্রে একটি ব্যাটারি পজিটিভ প্রান্তের সাথে সাথে আরেকটা ব্যাটারির পজিটিভ প্রান্ত এবং ব্যাটারির নেগেটিভ প্রান্তের সাথে অপর ব্যাটারি নেগেটিভ প্রান্ত যুক্ত করা হয় যার ফলে একই ভোল্ট দেখা যায় মাল্টিমিটারে। এইভাবে সংযোগের ফলে একটি যন্ত্র বা মোটর অনেক বেশি সময় ধরে চালানো যায়।