প্যারেন্টিং কি?
প্যারেন্টিং হচ্ছে একটা লাইফ স্টাইল যা আমাদের রাতারাতি পরিবর্তন আনা সম্ভব না। এই লাইফস্টাইল এর মূল কথা হচ্ছে কানেক্ট বিফর কারেক্ট। আমাদের প্যারেন্টিং অনেকটা হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের মত; সব সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের ডিরেকশন আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে দিতে থাকে যা মোটেও সঠিক নয়। আমরা কারেক্ট করে বেশি কানেক্ট করি কম। যার ফলে আপনি বাচ্চার সাথে মোটেও কানেকশন করতে পারছেন না। যার ফলে সন্তানের ভিতরে সেলফ লাভড, রেসপেক্ট এগুলো গড়ে উঠছে না যা জীবনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। সন্তানের উপর প্যারেন্টিং এর প্রভাব অনেক।
প্যারেন্টিং কি আবার শেখার প্রয়োজন আছে?/প্যারেন্টিং শিক্ষার গুরুত্ব কি/প্যারেন্টিং না জানলে কি হবে?
কথায় আছে, “If you fail to plan, you are planning to fail.”
অনেকের ধারণা, সন্তান এমনিতেই ভালো মানুষ হয়ে উঠবে, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে বা আপনার পছন্দের মত মানুষ হবে। এক্ষেত্রে আমরা অনেকেই ৮০ বা ৯০ দশকের উদাহরণ টেনে ধরি। একটা কথা ভেবে দেখুন
আগে এত কম্পিটিশন ছিল না, কিন্তু এখন অনেক কম্পিটিশন রয়েছে। আমাদের সন্তানকে ভালো জায়গায় পৌঁছাতে হলে কঠিন প্রতিযোগিতা করতে হবে। আগের তুলনায় এখনকার কম্পিটিশন অনেক বেশি। এজন্য আপনার সন্তানকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে এগিয়ে নিতে স্ট্র্যাটেজি থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন একটি ছোট কোম্পানি থেকে মিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হতে স্ট্র্যাটেজি প্রয়োজন, তেমনি সন্তানকে বড় মানুষ, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতেও সঠিক দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকলে, যেমন একটি উড়োজাহাজ এক ডিগ্রি এঙ্গেলের জন্য আমেরিকার পরিবর্তে সাউথ আফ্রিকায় চলে যেতে পারে, তেমনি আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎও ভুল পথে চলে যেতে পারে। তাই, প্রপার স্ট্র্যাটেজি বা প্যারেন্টিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানের সঠিক পথ নির্ধারণ করতে পারবেন।
প্যারেন্টিং স্টাইল কত প্রকার ও কি কি?
প্যারেন্টিং স্টাইল বলতে মূলত মূলত শিশুর লালন পালন করার পদ্ধতিকে বোঝায় অর্থাৎ আপনি শিশুটাকে কিভাবে বড় করে তুলতে চান, আপনার শিশুর সাথে আপনি কেমন আচরণ করবেন, কি ধরনের শিক্ষা দেবেন, এই সব কিছুই থাকবে প্যারেন্টিনের স্টাইলের অন্তর্ভুক্ত
প্যারেন্টিং মূলত তিন প্রকার
Authoritarian প্যারেন্টিং
Authoritative প্যারেন্টিং
Permissive প্যারেন্টিং
Authoritative প্যারেন্টিং:
এই তিন ধরনের মতে Authoritative হচ্ছে আমাদের সমাজের জন্য হবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সমাধান। এই প্যারেন্টিং স্টাইলে পিতা-মাতা সন্তানের উপর আকাঙ্ক্ষা রাখলেও তাদের উপরে কোন কিছু চাপিয়ে দেয় না। বাবা মায়ের সন্তানের মতামত যুক্তি সহকারে গ্রহণ করে থাকে বিবেচনা করে থাকে। এই ধরনের প্যারেন্টিং স্টাইলের ফলে সন্তানরা লেখাপড়ায় এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিচক্ষণ হয়।
Positive প্যারেন্টিং:
পজিটিভ প্যারেন্টিং একটি পদ্ধতি যেখানে বাবা-মা তাদের বাচ্চাদের প্রতি সদয়, সম্মানজনক, এবং সহানুভূতিশীল আচরণ করেন। এই পদ্ধতিতে বাবা-মা বাচ্চাদের অনুভূতি এবং প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দেন এবং তাদের সাথে খোলামেলা ও ইতিবাচক যোগাযোগ বজায় রাখেন।
পজিটিভ প্যারেন্টিং এবং Authoritative Parenting এর মধ্যে পার্থক্য:
পজিটিভ প্যারেন্টিং:
বাচ্চাদের অনুভূতি এবং মতামতকে গুরুত্ব দেয়।
সহানুভূতিশীল এবং সমর্থনমূলক আচরণ।
বাচ্চাদের সাথে খোলামেলা এবং সম্মানজনক যোগাযোগ।
শাস্তির পরিবর্তে শিক্ষামূলক পদ্ধতির ব্যবহার।
Authoritative প্যারেন্টিং:
উচ্চ প্রত্যাশা এবং নিয়মানুবর্তিতার সমন্বয়।
গঠনমূলক শাস্তি এবং নিয়ন্ত্রণমূলক পদ্ধতি।
বাচ্চাদের সাথে স্পষ্ট এবং সুশৃঙ্খল যোগাযোগ।
বাচ্চাদের স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধ শেখানো
কোনটা ভালো বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থার জন্য/ সন্তানের সফলতায় সঠিক প্যারেন্টিং কোনটি?
বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় পজিটিভ প্যারেন্টিং এবং Authoritative Parenting এর মিশ্রণ ভালো ফলাফল দিতে পারে। পজিটিভ প্যারেন্টিং এর মাধ্যমে বাচ্চারা ভালোভাবে শিখতে এবং বিকশিত হতে পারে, আর Authoritative Parenting এর নিয়মানুবর্তিতা এবং শৃঙ্খলা তাদেরকে সামাজিক এবং ব্যক্তিগত জীবনে সুশৃঙ্খল রাখতে সহায়তা করে।
আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকে অনুরোধ করব আমাদের ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখুন এবং আমাদের ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপে জয়েন থাকুন। ওয়ার্ল্ডের বেস্ট প্যারেন্টিং বইসমূহ থেকে মুসলিম প্যারেন্টিং কি কেন কিভাবে করতে হয়; এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আর্টিকেল বাংলা অনুবাদ করে পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে।
পজিটিভ প্যারেন্টিং এর কিছু টিপস:
ওপেন ডিসকাশন : বাচ্চাদের সাথে নিয়মিত এবং ওপেন ডিসকাশন করুন। তাদের অনুভূতি এবং মতামত শুনুন এবং সমর্থন দিন।
সহানুভূতিশীল আচরণ: বাচ্চাদের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং সম্মানজনক আচরণ করুন।
প্রশংসা এবং উৎসাহ: বাচ্চাদের ছোট ছোট সাফল্য এবং প্রচেষ্টা প্রশংসা করুন এবং তাদেরকে উৎসাহিত করুন।
সময় দিন: বাচ্চাদের সাথে সময় কাটান এবং তাদের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করুন।
শিক্ষামূলক পদ্ধতি: ভুলের জন্য শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে শিক্ষামূলক পদ্ধতির মাধ্যমে বাচ্চাদের শেখান।
নিয়ম এবং সীমা: বাচ্চাদের জন্য স্পষ্ট নিয়ম এবং সীমা নির্ধারণ করুন এবং তা মেনে চলার জন্য তাদেরকে উৎসাহিত করুন।