Smart Child Bd

আপনার সন্তান কি মিথ্যা বলে? মিথ্যা বলার কারণ এবং সমাধান

বাচ্চারা প্রায় ৩ বছর বয়সে মিথ্যা বলা শুরু করে, যখন তারা বুঝতে শেখে যে আপনি সবসময় তাদের পাশে নেই এবং সব কিছু জানেন না। ৪ বা ৫ বছর বয়সে তারা জানে যে মিথ্যা বলা ভুল। ৫ থেকে ৮ বছর বয়সে বাচ্চারা অনেক সময় মিথ্যা বলে খারাপ কাজ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বা তারা কতটুকু পার পায় তা পরীক্ষা করার জন্য। তবে তারা প্রায়ই প্রশ্ন করা হলে সত্যি কথা স্বীকার করে, কারণ তাদের মিথ্যা ধরা পড়া সহজ হয় বা মিথ্যা বজায় রাখা কঠিন হয়। দুর্ভাগ্যবশত, বয়স বাড়ার সাথে সাথে বাচ্চারা মিথ্যা বলা এবং তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আরও দক্ষ হয়ে যায়।

মিথ্যা বলা শিশুদের আবেগীয় এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের একটি অংশ। যেহেতু সব বাচ্চাই কোনো না কোনো সময় মিথ্যা বলে, তাই এটি নিয়ে বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। শান্ত থাকুন এবং এই বিকাশের পর্যায়ের জন্য প্রস্তুত হোন। স্কুলগামী বাচ্চাদের মিথ্যা বলার প্রবণতা কমাতে, কেন তারা মিথ্যা বলে বা মিথ্যা বলার মাধ্যমে তারা কী অর্জন করে তা বোঝা এবং সেই অনুযায়ী আচরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

বাচ্চারা কেন মিথ্যা বলে:

  • নিজেদের সম্পর্কে ভালো বোধ করার জন্য
  • সহপাঠীদের অনুমোদন পাওয়ার জন্য এবং তাদের সাথে মিশে যাওয়ার জন্য
  • প্রতিযোগিতা করার জন্য এবং অন্যদের চেয়ে ভালো মনে হওয়ার জন্য
  • দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য
  • তারা আপনাকে মিথ্যা বলতে দেখে এবং পার পেতে দেখে
  • সত্যিই ভুলে যাওয়ার জন্য
  • মনোযোগ পাওয়ার জন্য
  • ভেবে না বলে ফেলা (অপ্রত্যাশিত মিথ্যা বলা)
  • সীমা পরীক্ষা করার জন্য
  • সমস্যার বাইরে থাকার জন্য

মিথ্যা কথা নিয়ন্ত্রণ বা  কমানোর উপায়:

১. বাচ্চা কতবার মিথ্যা বলে এবং কোন মাত্রায় বলে তা বিবেচনা করুন। মাঝে মাঝে কিছু মিথ্যা উপেক্ষা করা যেতে পারে, বা আপনি আপনার সন্তানকে জিজ্ঞাসা করে বাস্তবতার দিকে পুনঃনির্দেশ করতে পারেন, যেমন “সে কি সত্যিই ইচ্ছে করে তোমাকে মেরেছে, নাকি দুর্ঘটনায় লেগেছে?” তাকে সত্য বলার একটি সুযোগ দিন। আপনি জিজ্ঞাসা করতে পারেন, “এটি কি সত্য নাকি তুমি গল্প বলছ? আবার কী হয়েছে বলো।” তাদের আনসার প্রক্রিয়া করার এবং উত্তর দেওয়ার জন্য ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড দিন। শান্ত থাকুন এবং সত্য বলার জন্য তাদের প্রশংসা করুন, যেমন, “মা (বা বাবা) তোমাকে সত্যি বলার জন্য ধন্যবাদ।”

২. যে সমস্ত মিথ্যার কনসিকুএেন্স খারাপ সেসব ক্ষেত্রে সন্তান্দেরকে শেখানো যায় যে মিথ্যা বলা অগ্রহণযোগ্য। যেমন অনেক সন্তান স্কুলের হোমওয়ার্ক  নিয়ে মিথ্যা কথা বলে; সেই ক্ষেত্রে, হোম ওয়ার্ক জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়ে গেলেও কাজটি শেষ করতে হবে (যৌক্তিক পরিণতি) এবং সেই কাজের জন্য খারাপ গ্রেড পাবে (প্রাকৃতিক পরিণতি) এই ব্যাপারটা ক্লিয়ারলি তাকে বুঝাতে হবে। সময়মতো হোমওয়ার্ক সম্পন্ন করার উপায় নিয়ে আলোচনা করুন। সময় মত কাজ সম্পন্ন না করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাকে ভিডিও গেম বা ফোন থেকে দূরে রাখতে পারেন সফট বাট ক্লিয়ার ডিরেকশন হিসেবে।

একটা জিনিস খেয়াল করুন যে আমার পরামর্শের মধ্যে আপনার সন্তানকে মিথ্যাবাদী বলা বা তাদের সাথে চিৎকার করা, হুমকি দেওয়া, লজ্জা দেওয়া, বা মারধর করা বা অন্য কোনও ক্ষতিকারক আচরণের উল্লেখ নেই। আপনি যদি আজ আপনার সন্তানকে মিথ্যাবাদী বলেন, তবে কি তারা সবসময় মিথ্যাবাদী থাকবে? না। তারা মিথ্যা বলেছে; ব্যাস এতোটুকুই। আচরণটিকে লেবেল দিন, সন্তানকে নয়!

Subscribe Us

1 thought on “আপনার সন্তান কি মিথ্যা বলে? মিথ্যা বলার কারণ এবং সমাধান”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart