১. হিউমান নেচার:
মানুষ হিসেবে আমার কখনো ভালোবাসা ভাগাভাগি করে নিতে পারি না। এটা মানুষের সহজাত মন মানসিকতা । তবে আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা অন্যের সাথে আমাদের ভালোবাসা শেয়ার করার প্রক্রিয়া শিখে যায়। ঠিক এই ব্যাপারটা মাথায় রেখে আমাদের সন্তানের সাথে ডিল করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ এক সন্তানের সামনে আরেক সন্তনের প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা দেখানো উচিত নয়।
২. সন্তানদের মধ্যে কম্পারিজন:
আমরা সন্তানদের মধ্যে কম্পারিজন করি যা কখনোই ঠিক না। আবার অনেকে মনে করেন তিনি কোন কোম্পারিসন করছেন না । কম্পারিজন দুই ধরন আছে একটি হচ্ছে স্পষ্ট আরেকটা অস্পষ্ট। স্পষ্ট তুলনার উদাহরণ হচ্ছে “তুমি তো কাজটি করনি বাট তোমার ভাই তো ঠিকই কাজটি করেছে।” এই ধরনের তুলনা সরাসরি হিংসা তৈরি করে।
দ্বিতীয় ধরনের তুলনা হচ্ছে এটা সূক্ষ্ম। যেমন ধরুন একই বয়সের অন্যের ছেলে যদি ভালো রেজাল্ট করে তাহলে আমাকে মন খারাপ হয়ে যায়, সন্তানের প্রতি আমাদের আচরণ চেঞ্জ হয়ে যায় যা তুলনা থেকে তৈরি হয়েছে। এধরনের তুলনা ভাই-বোনদের মধ্যে হিংসা এবং প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে যা সম্পর্কে আপনাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে এবং বন্ধ করতে হবে।
৩. পিতা মাতার ভাই-বোনদের মধ্যে সম্পর্ক:
বাবা-মায়ের ভাই-বোনরদের মধ্যে সম্পর্ক আপনার সন্তানদের উপর প্রভাব ফেলে। যদি আপনার ভাই বোনের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ থাকে তাহলে তা আপনার সন্তানেদের সম্পর্কের উপরে পড়বে। যদি এরকম থেকেও থাকে তাহলে তা আপনার সন্তানের সাথে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। উদাহরণস্বরূপ আপনি আপনার সন্তানকে বলতে পারেন যে আমার ভাইয়ের সাতে আমার সম্পর্ক ভালো না বাট তুমি তোমার ভাইয়ের সাথে ভালো আচরণ কর। এই ধরনের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড থেকে বিরত থাকুন।
৪। আত্মীয়-স্বজনের কমেন্টস:
ভাই কিংবা বোন আসার খবর পেয়ে সাধারণত ছোটোরা খুশি হয়। কিন্তু পরিবার পরিচিতদের কিছু মানুষ খানিকটা মজার ছলেই ছোটো শিশুকে বলতে থাকে যে মা-বাবা এবার আর তাকে ভালোবাসবে না। ছোটো ভাই কিংবা বোনকেই বেশি ভালোবাসবেন। এসব শুনে ছোটোদের মনে হিংসে ঢুকে যায়। তার উপর যখন সত্যিই ছোটো ভাই বা বোনকে মা-বাবা যত্ন নিতে শুরু করে শিশু ভাবে তাকে আর কেউ ভালোবাসেন না।
৫. কোঅপারেটিভ পরিবেশ তৈরি করুন:
বাড়িতে খেলার পরিবেশ তৈরি করতে চেষ্টা করুন। যেমন আপনি দুজনকে একে অপরের সাথে খেলার জন্য একই খেলনা দিতে পারেন। এটি এমন অ্যাপ হতে পারে যার জন্য উভয়কেই একই ফোন বা ল্যাপটপে খেলতে হয়। Physical activity এর জন্য আপনি এমন খেলার ব্যবস্থা করতে পারেন যাতে প্রতিটি শিশুর সমান অবদানের প্রয়োজন হয়। এটা হতে পারে টেবিল টেনিস।
৬. নিজের অধিকার হারানোর ভয়:
যখন একটি নতুন ভাই বা বোন পরিবার আসে, তখন বড় সন্তানেরা তাদের গুরুত্ব হারানোর ভয়ে ভীত হতে পারে, যেমন নতুন সহকর্মী যোগ দিলে কর্মস্থলে অন্যরা চিন্তিত হয়। এই ভয় দূর করার জন্য আপনি কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন । এই যেমন ধরুন দুজনের কিছু টুগেদার লাভিং পিকচার, শেয়ারিং সামথিং পিকচার আপনার দেয়ালে অথবা পড়ার টেবিলে সামনে ঝুলিয়ে দিতে পারেন।
৭. এভয়েড হার্ট ফুল কমেন্ট :
একটি সাধারণ বাক্য যা বড় সন্তানদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক, তা হল, “তুমি বড়, তাই তোমাকে ছোট ভাইবোনের জন্য সেটা দিতে হবে।” এই বাক্যটি বড় সন্তানকে অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করে। এমন বাক্য ব্যবহার করার পরিবর্তে, ন্যায্য এবং বিবেচকভাবে সমস্যাগুলির সমাধান করুন এবং ভাইবোনদের মধ্যে শেয়ারিং পরিচালনা করুন।
৮. ইকুইলি ট্রিট করা: সব সন্তানকে ইকুয়াল ট্রিট করতে হবে ; কাউকে বড় বা ছোট সম্বোধন করা ঠিক না। এতে করে তাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়।
৯. ফান শেয়ার করার সুযোগ তৈরি করে দিন:
তাদেরকে এমন খেলনা বা এমন কাজ দিন যাতে একজন আরেকজনের সাথে ফান শেয়ার করতে পারেন এবং সে কাজগুলো করতে টিম হিসেবে কাজ করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে তাদেরকে যদি মোবাইলে গেম খেলতে দেন তাহলে এমন গেম সিলেক্ট করুন যাতে দুইজন একসাথে একই ডিভাইসে খেলতে হয়।
১০. ডেডিকেটেড টাইম সিলেক্ট করুন: যে নির্দিষ্ট ডেডিকেটেড টাইমে তাদেরকে কালার করতে অথবা রিডিং একসাথে পড়তে দিন।
১১. ফিজিক্যাল হাগ এবং অ্যাপোলাইজেস করতে দিন:
চেষ্টা করবেন দিনে অন্তত একবার বা দুইবার ফিজিক্যালি হাগ করাতে। কেউ কোনো কারণে ব্যথা বা কোন ভুল করলে apology চাওয়ার সুযোগ দিন।
১২. বড়জনকে ছোটজনের টিচার বানান: বড়জনকে ছোটটার টিচার হিসেবে খেলার সুযোগ দিলে এদের মধ্যে কানেকশন বৃদ্ধি পাবে। অলয়েজ চেষ্টা করবেন ছোটজনের সাথে টিচার টিচার খেলতে।
১৩. ব্রেইন storming করার সুযোগ দিন’: এমন প্রবলেম তাদের মাঝে ছুড়ে দিন যাতে তারা দুজনে ব্রেন স্টর্মিং করে এটার সল্যুশন বের করে। সব সময় একটা কথা বলবেন প্রবলেম যেহেতু আছে অবশ্যই তার সলিউশনও আছে। এতে করে এরা টিম ওয়ার্ক করার উদ্ভূত হবে।
Sources:
1. Dealing With Sibling Rivalry
2. Handling sibling fights