
অন্যান্য প্যারেন্টসদের মত আমিও আমার এই জার্নিতে ডিফিকাল্টি ফেইস করেছে। অতিরিক্ত জেদের সবচেয়ে বড় প্রবলেম হচ্ছে তাকে কোন কিছু সহজে শেখানো যায় না; অপরদিকে তার কথা মেনে নিলে তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়। এই প্রবলেম থেকে বের হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু অলম্বন করতে হবে। বিভিন্ন মাধ্যম এবং এক্সপার্টদের ওপিনিয়ন থেকে আমি এখানে শীর্ষ ৭ টা প্রাক্টিক্যাল উপায় বর্ণনা করব যা আপনার সন্তানদের অতিরিক্ত জেদ কমাতে সাহায্য করবে।
Dr. Laura Markham, একজন প্রখ্যাত চাইল্ড বিশেষজ্ঞ বলেন “Connection before correction. Build a strong bond with your child, and they will be more receptive to your guidance”
অর্থাৎ সন্তানকে কারেকশন করার আগে তার সাথে কানেকশন তৈরি করতে হবে।
১. কানেকশন বিফোর কারেকশন: এই এডভাইসটি আমি আমার প্র্যাকটিক্যাল জীবনে এপ্লাই করেও সুফল পেয়েছি। আমার বড় সন্তানকে আমি যা-ই বলতাম সে সবকিছুতেই “না” শব্দটি বলত প্রথমে। তাকে কারেকশন করার আগে আমি তার সাথে কানেকশন বিল্ডআপ করা শুরু করলাম। প্রথম ২১ দিন কন্টিনিউয়াসলি তার সাথে কানেকশন বিল্ড আপ করার জন্য বিভিন্ন আর্টিকেল থেকে পাওয়া প্রসেস অবলম্বন করলাম (কানেকশন বিল্ডা কিভাবে করতে হয় তার জন্য পরবর্তীতে একটি আর্টিকেল পোস্ট করা হবে)। আলহামদুলিল্লাহ তারপর থেকে তাকে আমি যেই ইনস্ট্রাকশন দিতাম সে তা ফলো করতো।
২. শান্ত এবং ধৈর্যশীল থাকুন: আমি জানি একজন অভিভাবক হিসেবে এটা আপনার জন্য কঠিন কাজ। পরিস্থিতি সবসময় এমন থাকে না যে আপনি শান্ত এবং ধৈর্যশীল ভাবে ম্যানেজ করতে পারবেন স্পেশালি দুই বা ততোধিক ছেলে-মেয়ে যাদের আছে এটা আরো কঠিন। এক্ষেত্রে একটা কথা মনে রাখবেন আপনার আমার সন্তান এটেনশন seeker. সন্তান জানে না কিভাবে রাগ প্রকাশ করতে হয় অথবা কিভাবে প্রপার ওয়েতে কোন কিছু আদায় করতে হয় বা চাইতে হয়। সো সে যদি অতিরিক্ত জেদ করে তিনটি কাজ করবেন ১. ট্রাই টু অভারলোক বা তার দিকে মনোযোগ দিবেন না ২. তার এটেনশন ঘুরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া ৩. ছোটবেলায় আপনার জেদ উঠলে আপনি কিভাবে তা সঠিকভাবে প্রকাশ করতেন তা বলা। ফর এক্সামপল আপনার সন্তান ভেজিটেবলস খেতে চায় না। আপনি বলতে পারেন তোমার বয়সে আমিও পছন্দ করতাম না তারপরও আমি খেতাম কারণ এটা হেলদি, এটা সুস্বাস্থ্য গঠনের জন্য প্রয়োজন। এতে করে তার ইমোশন কে ভেলিডেট বা গুরুত্ব দেওয়া হল এবং প্রোপার মেসেজটাও তাকে দিয়ে দেয়া হল। যেহেতু আপনি তার ইমোশন কে গুরুত্ব দিয়েছেন সে ক্ষেত্রে ইন্সট্রাকশন ফলো করার ইনটেনশন বেশি হবে।
৩. অফার চয়েসেস: অফার চয়েজেসের মাধ্যমে আপনি আপনার সন্তানকে তার নিয়ন্ত্রণে পরিস্থিতি আছে এরকম একটা অনুভূতি দিতে পারেন যার মাধ্যমে সে বুঝতে পারবে সেই চয়েজ করেছে ফলে একগুঁয়ে আচরণ কমবে। ফর এক্সাম্পল আপনার সন্তান যদি হোমওয়ার্ক করতে না চায় তাহলে আপনি তাকে অপশন দিতে পারেন এমনভাবে যে তুমি কি হোমওয়ার্ক রাতের ডিনারের পরে করবে অথবা আগে করবে।
৪. ক্লিয়ার সীমা নির্ধারণ এবং তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করুন: আপনার আমার সন্তানের সবচেয়ে বড় লিমিটেশন হচ্ছে তাদের আচরণের সীমা কতটুকু কতটুকু আচরণ কেবল একসেপ্টেবল। সে ক্ষেত্রে রুটিন উদযাপন তাদেরকে আচরণের ক্লিয়ার সীমাবদ্ধতা সীমাবদ্ধতা এবং ধারাবাহিকতা জীবনে গড়ে ওঠে। যার ফলে তারা বুঝতে পারে তাদের কিছু আচরণ নন নেগোশিয়েবল এক্ষেত্রে রিওয়ার্ডস তার সাসটেইনেবল হ্যাবিট তৈরিতে সাহায্য করে ফর এক্সাম্পল আমার সন্তানের জন্য একটা ডেইলি রুটিন অথবা চেক লিস্ট তৈরি নমুনা আপনাকে দিলাম
৫. পজিটিভ অ্যাটিটিউড বিল্ড আপ : ইউজ বার্গার মেথড টু বিল্ড আপ এ রিসিপটেবল অ্যাপ্রচ। আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল আমরা অনেকে জানিনা কিভাবে একজন সন্তানকে একটা সু-শিক্ষা কিভাবে দিতে হবে। যেমন ধরুন আপনি যদি তাকে শুধু তার প্রবলেমের কথা বলেন সেক্ষেত্রে তার স্টাবর্ন্নেস বাড়বে। এক্ষেত্রে বার্গার মেথড অর্থাৎ “প্রথমে তার সুনাম করুন তারপর কোন ভুলটা করছে সেটা ব্যাখ্যা করুন এবং তার সলিউশন সহ এরপর আবার তার সুনাম করুন”। দেখা গেছে প্রায় ৯৫% চাইল্ড অতিরিক্ত রাগ না করে এটা ভালোভাবে গ্রহণ করে না।
৬. সহানুভূতি দেখানো এবং তার ফিলিংসকে মূল্যায়ন করা: আপনার সন্তানের যেকোনো ফিলিংস কে প্রথমে সহানুভূতি দেখান তারপর আপনার ইনস্ট্রাকশন দেন। উদাহরণঃ যদি আপনার সন্তান খেলার মাঠ ছেড়ে ছেড়ে যেতে না চায়, তাহলে বলুন, “আমি দেখছি তুমি খুব মজা করছেন এবং চলে যেতে চাইছো না। আমি বুঝতে পারি খেলা বন্ধ করে বাসায় চলে যাওয়া কঠিন , তবে তুমি চাইলে আমরা অন্য দিন ফিরে আসতে পারি।
৭. আপনি সন্তানের মডেল হন: সন্তানেরা সবচেয়ে বেশি ফলো করে আইডিয়ার তার বাবা অথবা মাকে। তাই যখনই পারেন তাকে দেখাবেন কিভাবে একটা সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করতে শান্তভাবে। আপনি যদি চান আপনার সন্তান পলাইটলি কথা বলুক তাহলে আপনাকে অবশ্যই কথা বলার সময় ওয়ার্ড সিলেকশন এন্ড বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে।
সামারি: শিশুদের মধ্যে অতিরিক্ত জেদ হ্রাস করার জন্য সহানুভূতি, ধৈর্য এবং ধারাবাহিক কৌশলগুলির সংমিশ্রণ প্রয়োগ প্রয়োজন। তাদের আচরণের পিছনের কারণগুলি বোঝার এবং এই ব্যবহারিক পদ্ধতিগুলি প্রয়োগ করার মাধ্যমে, আপনি আপনার সন্তানকে সময়ের সাথে আরও সহযোগিতামূলক এবং নমনীয় আচরণ গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারেন। মনে রাখবেন, প্রতিটি শিশুই অনন্য এবং একজনের জন্য যা কাজ করে তা অন্যের জন্য কাজ নাও করতে পারে। ধৈর্য ও অধ্যবসায়ী থাকুন এবং প্রয়োজনে পেশাদার পরামর্শ নিন।